× হোম দেশির খবর অনুষ্ঠান-কর্মসূচী-উদযাপন দেশের খবর দশদিক দুনিয়া দশকথা ভিডিও সব ছবি ভিডিও আর্কাইভ

মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়ার জবানিতে ‘আমার স্মৃতি আমার কথা’

নিজস্ব প্রতিনিধি-

১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:০৫ এএম । আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:২৪ এএম

বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়ার (ডান থেকে ৩য়) আত্মজীবনীমুলক গ্রন্থ "আমার স্মৃতি আমার কথা" এর মোড়ক উন্মোচন করে নোবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. দিদার-উল-আলম (বাম থেকে ৩য়)। ছবি-দেশি খবর।

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সমাজকর্মী নোয়াখালীর প্রবীন সমাজকর্মী সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁঞার জবানিতে ফুটে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল দিনগুলোতে নিজের অংশগ্রহণ, পরবর্তীতে রাজনৈতিক জীবন ও সামাজকর্মের নানান দিক। তাঁর রচিত আত্মজীবনীমুলক বই “আমার স্মৃতি আমার কথা” বইয়ে তিনি নির্মোহভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। যা আগামি সময়ে মুক্তিযুদ্ধ চচায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

শনিবার প্রকাশনা উৎসবের মধ্যদিয়ে বইটি পাঠকের হাতে তুলে দেয়া। সোনাইমুড়ী অন্ধ কল্যান সমিতি চক্ষু হাসপাতাল মিলনায়তনে প্রকাশনা উৎসবে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধান অতিথি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. দিদার-উল-আলম।

মুক্তির সংগ্রামের অকুতোভয় বীরসেনানী গোলাম মোস্তফা ভূঁঞা মুক্তিযুদ্ধকালীণ অবস্থার নিপুণ তথ্য সংগ্রহ ও সরবারাহ করার (ওহঃবষষরমবহপব ্ ঈড়হঃধপঃ) দায়িত্ব পালন করেছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। মুক্তিযুদ্ধে যোগদিতে ছাত্র-যুবকদের উদ্বুদ্ধ করা এবং প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে নিয়ে যাওয়া-  এসব করতে গিয়ে যুদ্ধকালীন সময়ে পায়ে হেঁটে ৬৬ বার ভারতে গেছেন এই মুক্তিযোদ্ধা। তিনি সোনাইমুড়ি অন্ধকল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সোক্রেটারি গত ৪৭ বছর ধরে তিনি এই দায়িত্ব পালন করছেন। এই সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানটি সারা দেশে পরিচিত।

প্রকাশিত বইয়ে তাঁর শিক্ষাজীবন, মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে ছাত্ররাজনীতির সাথে যুক্ত থাকা, মুক্তি সংগ্রামের শুরু থেকে মুক্তিযুদ্ধে দুঃসহ স্মৃতি কথা, দুই জন মুক্তিযোদ্ধার জীবন উৎসর্গের করুণ গাঁথা, এ সময়কার রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধকালীণ তিন দিনের দিনপঞ্জি, মুক্তিযুদ্ধে তথ্য কণিকা, মুক্ত নোয়াখালী, মুজিব বাহিনী (বিএলএফ) গঠন, জাসদ রাজনীতি,্বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখা, জেল জীবনের স্মৃতি, সোনাইমুড়ী অন্ধ কল্যাণ সমিতি, গণপাঠাগারসহ বিভিন্ন বিষয় নিবিড়ভাবে ফুটে উঠেছে।

নোয়াখালী সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক কাজী মো. রফিক উল্যার সভাপতিত্বে  স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন  প্রকাশনা উৎসব কমিটির সদস্য সচিব মনীন্দ্র কুমার মজুমদার ও গ্রন্থের রচয়িতা বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া। মুখ্য আলোচক ছিলেন চৌমুহনী সরকারি এসএ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বাংলাদেশ স্কাউট নোয়াখালী জেলা শাখার কমিশনার অধ্যাপক আবুল বাশার। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত সচিব (অব) বীরমুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম মিলন, অতিরিক্ত সচিব (অব) আতাউর রহমান, সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)  ইসমাইল হোসেন, সোনাইমুড়ী অন্ধ কল্যাণ সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মমিনুল ইসলাম বাকের, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বাহার,বীরমুক্তিযোদ্ধা হাতিয়া ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এনামুল হক, নোয়াখালী জেলা মাধ্যমিক স্কুল সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম, সোনাইমুড়ী অন্ধ কল্যাণ চক্ষু হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ আলতাফ হোসাইন শরীফসহ আরো অনেকে।

এসময় অন্যান্যদের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোজাম্মেল হক মিলন,বীরমুক্তিযোদ্ধা মিঞা মোহাম্মদ শাহজাহান, বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান, বেগমগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবুল হোসেন বাঙালী, সোনাইমুড়ী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার গোলাম মাওলা, গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের পরিচালক রাহা নব কুমারসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক গনমাধ্যমকমীসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিস্ঠানের প্রধান ও সহকারী শিক্ষক শিক্ষিকাগন।

বইয়ের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও স্বাধীনতা অর্জনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিলাম।  একজন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী ও বীরমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি গর্ববোধ করি । আমার অনেক অর্জন ও অনেক কস্টের স্মৃতি রয়েছে।  জীবনের নিয়মে আমরা সবাই একদিন চলে যাব কিন্তুু তার আগে জীবনের কিছু স্মৃতি ও অনুস্মৃতি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রেখে যেতে পারি তাহলে তারা জানবে এ দেশ কিভাবে কারা বাস্তবায়ন করে গেছেন। উত্তরাধিকারিদের ওপর নতুন প্রজন্মের ওপর স্বাধীনতা রক্ষার দায় বর্তাবে। আর এ তাগিদেই বইটি লেখা আমার প্রয়াস ছিল।  

অধ্যক্ষ মোঃ  আবুল বাসার বলেন ,মহান মুক্তিযুদ্ধে একজন সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা ও একজন সফল সংগঠক হিসেবে গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী রাজনৈতিক অ্বস্থায় সমাজ পরিবর্তনের অঙ্গিকার তাঁর অবস্থানই প্রমাণ করে। একজন নিবেদিত প্রাণ গণমানুষের মুক্তির জন্য লড়ে যাওয়ার এবংর সংগঠিত করার প্রত্যয় তাঁর মধ্যে আমরা দেখতে পাই।

বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত সচিব অব. আতাউর রহমান বলেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া একজন সৎ, পরোপকারী ও নিবেদিত সমাজকর্মী। নির্লোভ এ মানুষটির মধ্যে যদি লোভ লালসা থাকতো তাহলে আরও উপরে ওঠতে পারতো। ২০০৭ সালে আমি সোনাইমুড়ী উপজেলার নির্বাহী অফিসার থাকাকালীন সাদা মনের একজন মানুষ হিসেবে তাঁর নাম লিখিত প্রস্তাব আকারে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছিল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের উপাপার্য প্রফেসর ড. মোঃ দিদার-উল-আলম বলেন,  মানুষের জীবনকাল অনেক ছোট কিন্তু তার কর্মকাল অনেক বড়। একাগ্রতা,অধ্যাবসায়,অলসতা যার ভিতরে নেই, শৃঙ্খলা, সবচেয়ে বড় হলো সততা। এ প্রতিটি গুনের অধিকারী বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া। আর তাই তিনি  কখনো মারা যাবে না। তিনি এ সমাজের মানুষরে মাঝে বেঁেচ থাকবেন তাঁর মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ ও পরবর্তী মানুষের কল্যাণে সমাজ বিনির্মানে তাঁর  কর্মের মধ্যে দিয়ে।

‘ আমার স্মৃতি আমার কথা’ বইটির প্রকাশক রাবেয়া বসরী সুবর্ণা। ১৯০ পৃস্টার বইটির মুল্য ৩০০ টাকা।

Deshi Khobor

সম্পাদক : মাহমুদুল হাসান (রুদ্র মাসুদ)

ঠিকানাঃ ৮৬-৩২ ১০২ এভিনিউ, ওজন পার্ক, দ্বিতীয় তলা, নিউ ইয়র্ক, এনওয়াই-১১৪১৬, ইউএসএ

© 2024 Deshi Khobor All Rights Reserved. Developed By Root Soft Bangladesh.