নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার অন্তর্ভূক্ত ভাসানচরের মালিকানা নিয়ে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে হাতিয়াবাসী। ভাষাচর চর নিয়ে জ্বালানি উপদেষ্টার ঘৃণ্য চক্রান্তের প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৮এপ্রিল) দিনভর বিক্ষোভ উত্তাল ছিলো উপজোলা সদর ওছখালী। এনিয়ে সকাল থেকে ওছখালি গোলচত্তরে ভাসানচর রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে প্রতিবাদ সভা ও অবস্থান ধর্মঘট পালন করা হয়।
সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্ষুব্ধ জনতা মিছিল সহকাওে উপজেলা সদরে জড়ো হয়। এসময় তারা ভাসানচরে অবৈধ হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে নানান স্লোগান দিতে থাকে। এসময় ক্ষুব্ধ দ্বীপবাসী উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের পদত্যাগের দাবি করেন। এতে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন সহকারি অধ্যাপক আনম নাঈম শামীম, এডভোকেট নুরুল ইসলাম, এডভোকেট ফজলে আজিম তুহিন, আব্দুল কাদের , জি এম ইব্রাহিম , আরজুল সাফদার, আমজাদ সাফদার, এডভোকেট সাদ্দাম হোসেন, মো: ফাহিম উদ্দিন, সুমন তালুকদার, আরেফিন আলী, রিয়াজ মাহমুদ,আয়াত হোসেন জুয়েল, মো: হালিম ও ডাক্তার জোবায়েরসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
অবস্থান ধর্মঘটে বিক্ষুদ্ধরা বলেন, ভাসানচর একটি মিমাংসিত বিষয়। এটিকে সন্ধীপের সাথে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা করে আঞ্চলিক দাঙ্গা লাগানোর উসকানি দেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়ে নগ্ন হস্তক্ষেপ করছেন সন্ধীপের বাসিন্দা ও বর্তমান সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্ঠা ফাওজুল কবির খান। যা কোন ভাবে মেনে নেওয়া হবে না। আঞ্চলিক শান্তি বিনষ্ট করার কারণে এই উপদেষ্ঠার পদত্যাগের দাবি জানানো হয় প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে।
জানা যায়, নোয়াখালী থেকে সন্ধীপ আলাদা হয় ১৯৫৪ সালে। এরপর নোয়াখালী উপকূলে সাগরে জেগে উঠা নতুন চর নোয়াখালী জেলার সাথে রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ২০১৬-২০১৭ জরিপ মওসুমে দিয়ারা জরিপের মাধ্যমে ভাসানচর, শালিকচর, চরবাতায়ন, চরমোহনা, চরকাজলা ও কেওড়ার চরসহ ৬টি মৌজা হাতিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেই ছয় মৌজার একটি ভাসানচর। সেখানে হাতিয়া উপজেলাধীন বনবিভাগ বনায়ন সৃজন করে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সরকার রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প হিসেবে ভাসানচরকে হাতিয়া উপজেলার প্রশাসনিক এলাকার মধ্যে নিরাপত্তাসহ রাষ্ট্রীয় সকল ধরনের কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সরকার এক গেজেটে হাতিয়া থানাধীন চরইশ্বর ইউনিয়নের আওতাধীন ওই মৌজা ভাসানচর, শালিকচর, চরবাতায়ন, চরমোহনা, চরকাজলা ও কেওড়ার চর মৌজা নিয়ে ভাসানচর থানা গঠন করে জননিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে। সেই গেজেটেও সুস্পষ্টভাবে ভাসানচরকে হাতিয়ার আওতাভুক্ত হিসাবে উল্লেখ করা হয়। সরকারি গেজেট উপেক্ষা করে ভাসানচরকে সন্দ্বীপের সাথে অন্তর্ভুক্ত করার অপেচষ্টার অভিযোগ উঠে।
সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে প্রভাব খাটিয়ে ভাসানচরকে সন্দ্বীপের অংশ হিসাবে করায়ত্ত করতে চেষ্টা করে এই গোষ্ঠি। এনিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং জোনাল সেটেলমেন্টে অফিসের দুটি পত্রেও ভাসানচর দিয়ারা জরিপের মাধ্যমে হাতিয়া উপজেলার অন্তর্ভূক্ত বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু জিআইএস প্রযুক্তির দোহাই দিয়ে ভাসানচরকে সন্দ্বীপের অংশ হিসাবে অন্তর্ভূক্ত করার সুপারিশ করা হয় ওই দুটি পত্রে। সন্দ্বীপের বাসিন্দা বর্তমান সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্ঠা ফাওজুল কবির খানের বিরুদ্ধে ভাসানচর নিয়ে নেপথ্য থেকে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠে। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমালোচনার ঝড় উঠে।
এদিকে সরকারের এই গেজেট উপেক্ষা করে ভাসানচরকে সন্ধীপের সাথে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে হাতিয়া সহ জেলা ও রাজধানীতে ভাসানচর রক্ষা আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।
সম্পাদক : মাহমুদুল হাসান (রুদ্র মাসুদ)
ঠিকানাঃ ৮৬-৩২ ১০২ এভিনিউ, ওজন পার্ক, দ্বিতীয় তলা, নিউ ইয়র্ক, এনওয়াই-১১৪১৬, ইউএসএ
© 2025 Deshi Khobor All Rights Reserved. Developed By Root Soft Bangladesh.