× হোম দেশির খবর অনুষ্ঠান-কর্মসূচী-উদযাপন দেশের খবর দশদিক দুনিয়া দশকথা ভিডিও সব ছবি ভিডিও আর্কাইভ

মহিমান্বিত রজনীতে কোরআন নাজিল হয়েছে কল্যাণের বার্তা আর জ্ঞান অন্বেষণের তাগিদ নিয়ে

মাহমুদুল হাসান (রুদ্র মাসুদ)-

০৮ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৪০ এএম । আপডেট: ১৬ ঘণ্টা আগে

মহিমান্বিত রজনীতে আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা মানবতার মুক্তির দূত মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর কাছে জিব্রাইল (আঃ) মাধ্যমে মহাগ্রন্থ পবিত্র আল-কুরআন অবতীর্ণ করেছেন। পবিত্র কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার কারণে এবং এই মহিমান্বিত রজনী রমজান মাসে হওয়ায় রমজানের গুরুত্বও সমধিক। এই কুরআন শুধুমাত্র মুসলামানদের জন্য নয় সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহ সুবহানাহুতায়লার পক্ষ থেকে পথনির্দেশক।

পবিত্র কুরআনের পরতে পরতে আল্লাহ সুবহানাহুতায়লা বিবৃত করেছেন কেন এই কুরআন নাজিল করেছেন। সকল কিছুই স্পষ্ট করে বর্ণনা করা হয়েছে । যাতে মানুষ সতর্ক হতে ও পথনির্দেশ লাভ করেন। কোরআনে আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা নিজেই সেই ঘোষনা দিয়েছেন- 

রমজান মাস, উহাতে মানুষের হেদায়েত ও সৎপথের নিদর্শন ও ন্যায় অন্যায়ের পার্থক্যকারী রূপে কুরআন নাজিল হয়েছে (সূরা বাক্বারাহ্-১৮৫)।

নিশ্চয়ই আমি কোরআন অবতীর্ণ করেছি এক কল্যাণময় রজনীতে; আমি তো সতর্ককারী। সূরা আদ্ দুখা-ন- ০৩।

কুরআন অবতীর্ণের রাতকে আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা মহিমান্বিত রাত হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন। এর গুরুত্ব এতটাই যে, এই রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। শুধু কুরআন অবতীর্ণের জন্যই এতোটা মর্যাদাপূর্ণ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে এই রাতকে। এটি রমজানের শেষ দশ দিনের বিজোড় রাতের যে কোন এক রাত হতে পারে। আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা ঘোষণা করেন-

আমি এ কুরআন অবতীর্ণ করেছি মহিমান্বিত রজনীতে (আয়াত-০১), মহিমান্বিত রজনী সম্পর্কে তুমি কি জান? (আয়াত-০২), মহিমান্বিত রজনী সহস্র মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ (আয়াত-০৩), প্রত্যেক কাজে সে রাতে ফেরশতাগণ ও জিব্রাঈল অবতীর্ণ হয় তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে (আয়াত-০৪), আর ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত সে রজনী শান্তিপ্রসূত থাকে। সূরা-ক্বাদর।

আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা তাঁর প্রিয় বন্ধু হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি নির্দেশ করেছেন এ কুরআন মানুষের কাছে পৌছে দিতে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা বলেন- হে রাসূল! তোমার রবের কাছ হতে যা তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রচার কর, যদি না কর তবে তো তুমি তাঁর বার্তা প্রচার করলে না; আল্লাহ তোমাকে মানুষ হতে রক্ষা করবেন; বস্তুত আল্লাহ কাফের দলকে হেদায়েত করেন না। সূরা আল-মায়িদাহ-৬৭।

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উম্মত হিসাবে কুরআন প্রচারে দায়িত্ব মুসলমানদের ওপর বর্তায়। সেই কাজটুকু আমরা কতুটকু করছি কিংবা নিজেরা কোরআনকে কতটুকু ধারণ করছি সেটি প্রশ্নস্বাপেক্ষ।

এই লিখার শুরুতে উল্লেখ করেছিলাম পবিত্র কুরআন শুধুমাত্র মুসলমানদের জন্য নয় সমগ্র মানবজাতির জন্য পথনির্দেশক। আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালার পবিত্র কোরআনে সেটি ঘোষণা করেছেন- 

এ কিতাব (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি যা কল্যাণময়, তাই এর অনুসরণ কর এবং সাবধান হও হয়তো অনুগ্রহ পাবে। সূরা আন্আম-১৫৫।

এ কুরআন সুস্পষ্ট দলিল মানবজাতির জন্য এবং নিশ্চিত বিশ্বাসীদের জন্য পথনির্দেশ ও অনুগ্রহ। সূরা জ্বা-ছিয়াহ-২০।

আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা মানুষের জন্য কল্যাণ এবং পথনির্দেশের এই ঘোষণাসহ সকল বিষয়ে জানতে হলে অধ্যায়ন করতে হবে,  জ্ঞান অন্বেষণ করতে হবে। কারণ; পবিত্র কুরআনে এমন কোন বিষয় আলোকপাত করনি যা এই দুনিয়াতে নেই। তাই কল্যাণকর সকলকিছুর অর্জন সর্বপরি আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যও কুরআন অধ্যায়ন তথা জ্ঞান অন্বেষণ অপরিহার্য।

হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর কাছে ওহি নিয়ে উপস্থিত হন জিব্রাইল (আঃ)। অবতীর্ণ হয় পবিত্র কুরআনের প্রথম পাঁচ আয়াত। যেখানে অধ্যায়নের বিষয়টি নির্দেশ করা হয়েছে। 

(০১) পাঠ কর, তোমার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। (০২) সৃষ্টি করেছেন মানুষকে রক্তপিন্ড থেকে। (০৩) পাঠ কর, আর তোমার রব অতি অনুগ্রহশীল। (০৪) যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। (০৫) শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না। সূরা-আলাক্ব।

সূরা আলাক্বের এই আয়াতগুলোর দিকে লক্ষ্য করলে জ্ঞান অন্বেষণের তাগিদ অনভূত হবে। পবিত্র কুরআনের অগণিত আয়াতে মানুষের জন্য আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালার মহত্ব বর্ণনা করা হয়েছে। তাঁর হুকুম ব্যাতিত কোন কিছুই সৃষ্টি হবার নয় এবং তাঁর অজ্ঞাতসারেও কিছু সংঘটিত হয়না। এটি অনুধাবন করার জন্য পবিত্র কুরআন বুঝা এবং কুরআনের বিধান চর্চা অনেক বেশী জরুরী। তাই, কুরআনেই বলা হয়েছে-

তাঁরই কাছে অদৃশ্যের চাবি রয়েছে, তিনি ভিন্ন কেউ তা জানে না; জলে-স্থলের সবকিছু তিনি অবগত, তাঁর অজ্ঞাতসারে একটি পাতাও পড়ে না, মৃত্তিকার অন্ধকারে এমন কোন বীজ হয় না বা রসযুক্ত কিংবা শুস্ক কোন বস্তু নেই যা সুস্পষ্ট কিতাবে (কুরআনে) নেই। সূরা আন্আম-৫৯।

পুরো পৃথিবীর মানুষ একই রকম নয়। মানুষ মানুষের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করে, পার্থক্য তৈরী করে। কিন্তু যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন সেই মহান রব মানুষে মানুষে ভাষায়, গায়ের বর্ণে, আচরণে, সাংস্কৃতি কিংবা জীবনাচরণে বৈচিত্র দিয়েছেন। ফলে মানুষের জীবনাচরণ এবং সত্তায় ভিন্নতা প্রতিফলিত হয়। কত সুনিপুণ স্রষ্টা আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা। তাই পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করা হয়-

এবং তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে এক নির্দশন ঃ আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণেও বৈচিত্র্য; এতে জ্ঞানীদের জন্য নির্দশন রয়েছে। সূরা রূম-২২।

পবিত্র কুরআন অর্থ, তাফসিরসহ তেলওয়াতের মাধ্যমে কুরআনের মর্ম উপলব্দি করার সুযোগ রয়েছে। কুরআন পড়তে না জানলে আমরা শিখে নিতে পারি। বয়স কখনো শিক্ষা গ্রহণের জন্য বাধা নয়। আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা আমাদের সেই তৌফিক দান করুক। আমীন।

-লেখক

মাহমুদুল হাসান (রুদ্র মাসুদ)

সম্পাদক, দেশি খবর।


Deshi Khobor

সম্পাদক : মাহমুদুল হাসান (রুদ্র মাসুদ)

ঠিকানাঃ ৮৬-৩২ ১০২ এভিনিউ, ওজন পার্ক, দ্বিতীয় তলা, নিউ ইয়র্ক, এনওয়াই-১১৪১৬, ইউএসএ

© 2024 Deshi Khobor All Rights Reserved. Developed By Root Soft Bangladesh.